বিভাগের সবচেয়ে বড় পশুর হাট জোড়াগেটে এবার সেরা গরুর নাম ‘ধলা বাবু’। গরুটির ওজন ১১শ’ ৫৫ কেজি ও দাম ১২ লাখ টাকা। দৃষ্টিনন্দন আর বিশাল দেহের এ পশুটি নিয়ে এসেছেন দিঘলিয়ার লাখোহাটি গ্রামের বাসিন্দা মো. নুর ইসলাম চৌধুরী।
তিনি জানান, তিনি ধলা বাবুকে আট বছর ধরে লালন পালন করছেন। খইল, ভূষি, কুটা ছিল এ গরুর প্রধান খাবার।
জোড়াগেট হাটের সেরা ছাগলটির নাম ‘রাজা’।রাজার দাম হাঁকা হচ্ছে ৭৫ হাজার টাকা।
রূপসা উপজেলার নৈহাটি থেকে হাফিজুর রহমান ছাগলটি হাটে এনেছেন।
তিনি বলেন, এটির দাম ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এ ছাগলের ৬০ কেজি গোশত হবে।
তার পাশেই একই জাতের আরও একটি ছাগলের দাম হাঁকা হচ্ছে ৭০ হাজার টাকা। চালনার স্বপন রায় এ ছাগলটি এনেছেন। ১৬ মাস ধরে তিনি এটি লালন পালন করছেন। নেপালী জাতের এ ছাগলের নাম রাখা হয়েছে ‘সোনালী’।
সরেজমিনে খুলনায় কয়েকটি পশুর হাটে দেখা গেছে, মাঝারি আকারের দেশি গরুই ক্রেতার চাহিদার শীর্ষে। স্থানীয় হাটগুলোতে কিছু সংখ্যক ভারতীয় গরুর উপস্থিতি থাকায় দেশি গরুর দাম তুলনামূলক কম।
সর্বশেষ ডুমুরিয়ায় সাপ্তাহিক খর্ণিয়া পশুর হাটে বড় আকারের ৪ মণ ওজনের দেশি গরু বিক্রি হয়েছে ১ লাখ টাকায়। গত হাটে এই আকারের গরুর দাম ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর মাঝারি আকারের আড়াই মণ ওজনের দেশি গরু বিক্রি হয়েছে ৫৮ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। গত হাটে যা ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে অনেক ক্রেতাই এবার হাটে আসার বদলে খামারিদের বাড়িতে গিয়ে দেখে-শুনে গরু কিনছেন। আর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বাজারে প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন বিক্রেতারা।
জানা গেছে, খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় জোড়াগেট পশুর হাটে গত বছর শেষ দিনে গরুর দাম কমে যাওয়ায় এবার অনেকেই শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছেন। শনিবার সকালে দাম ধরে রাখলেও দুপুরের পর থেকে বিক্রেতারা নিজের পশুটি অল্প লাভেই ছেড়ে দিচ্ছেন।
নড়াইল জেলার কালিয়া থেকে ৬টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন বিক্রেতা আজিজ শেখ। তার সবচেয়ে বড় গরুটির দাম ৯০ হাজার টাকা। আর সবচেয়ে ছোট গরুটির দাম ৪৫ হাজার টাকা। মাঝারি আকারের আড়াই থেকে তিনমণ ওজনের দেশি গরুর দাম হাঁকাচ্ছেন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। সকাল থেকে দুটি মাঝারি গরু বিক্রি করেছেন। হাটে বড় গরুর চেয়ে ছোট এবং মাঝারি আকারের গরুই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।
খুলনার তেরখাদা এলাকার গরু বিক্রেতা জয়নাল হোসেন জানান, মোটামুটি বড় আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে সব আকারের গরুর দামই ৬-৭ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে।
হাট পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছুর রহমান বিশ্বাস বলেন, হাটে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। হাটে ক্রেতা রয়েছে অনেক কিন্তু সেই তুলনায় বেচাকেনা শুরু হয়নি।
এবার জোড়াগেট পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। পুরো হাটটি সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রিত। ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আনিচুর রহমান জানান, এবার কোরবানির পশুর হাটে তিনস্তরের নিরাপত্তা আছে। প্রথমত সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারী। দ্বিতীয়ত হাটে পুলিশ ক্যাম্প ও তৃতীয়ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বড় হাটগুলোর পাশে পুলিশের টহল রয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞান ও মলম পার্টি দমনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।